বিভ্রান্তি নয়, একতাই শক্তি
একবার ভাবুন!!!
জন্মের পর আমাদের প্রথম পরিচয় কী ছিল?
আমাদের চিন্তা ও মননের শুরুটা কোথা থেকে হয়েছিল?
যখন আমরা বুঝতে শিখিনি, তখন আমাদের প্রথম শিক্ষা, আমাদের প্রথম দিকনির্দেশনা কী ছিল?
সেই প্রথম শিক্ষা আসত আমাদের পরিবার থেকে। পরিবারই ছিল আমাদের প্রথম স্কুল।
আমরা বড় হতে থাকলে, সেই প্রথম শিক্ষা আমাদের চরিত্র গঠনে প্রভাব ফেলেছিল। পরিবার, বিশেষত রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারগুলো, আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয় শিখিয়েছে। মা-বাবার নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, মানবিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক দায়িত্বের শিক্ষা ছিল আমাদের ভিত্তি। তবে, বড় হতে হতে, সামাজিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমরা শিখতে শুরু করেছি আরও অনেক কিছু। আমাদের মেধা ও যুক্তি আরও নিখুঁত হয়েছে, যা আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও চিন্তাধারা আরও পরিণত করেছে।
আজকের যুগে, রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারগুলো নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কিছু বিশেষ মহল বা ব্যক্তি, যারা নিজেদের রাজনৈতিক বা মতাদর্শিক স্বার্থে তৎপর, তারা নানা উপায়ে এই পরিবারের সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে ভুলভাবে চিত্রিত করে, নিজেদের প্রয়োজনীয় ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। এমনই একটি ঘটনা আমি সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি, যেখানে একজন আওয়ামী লীগের উত্তরসূরি আমার কাছে অকপটে বলেছিলেন যে, যারা নামাজ পড়েন, টাখনুর উপরে প্যান্ট পরেন, এবং আড্ডা দেন না, তারা জামায়াত, শিবির বা আল-কায়েদার মতো সংগঠনের সমর্থক হতে পারে! এ ধরনের ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে। এই ধারণাগুলো যে শুধু ভুল, তা নয়, এটি আমাদের আসল সমস্যাগুলোর সমাধান থেকে আমাদের আরো দূরে নিয়ে যায়।
আমাদের উচিত, এমন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকা। যারা রক্ষণশীল মুসলিম পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, তাদের উচিত নিজেদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে গর্বিত হওয়া। এটি একদিকে যেমন আমাদের পরিচয়ের অংশ, তেমনি আমাদের সমাজে শান্তি ও সম্মান স্থাপন করতে সাহায্য করবে। আমরা যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে গঠনমূলক আলোচনা করি, তবে নিশ্চিতভাবে একটি সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।
তবে, সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের নিজস্ব চিন্তা শক্তি ও বুদ্ধির মাধ্যমে আসল সত্যটি জানার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের পরিবারের দেয়া প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা, সবকিছুই আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক। সমাজের বিভেদমূলক প্রচারণার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, আমরা সঠিক পথে চলতে পারি, যেখানে সত্য ও ন্যায় সবার জন্য প্রাধান্য পায়।
মোটকথা, বিভ্রান্তি নয়, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠা হোক আমাদের লক্ষ্য।



Comments
Post a Comment